প্রতিবেদক:গৌরীশংকর মহাপাত্র।আজ সাঁতারু মিহির সেনের মৃত্যু দিন। ১৯৯৭এর ১১ইজুন ৬৬বৎসর বয়সে আজকের দিনে কোলকাতায় এলজাইমার্স ও পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু।
১৯৩০এর ১৬ ই নভেম্বর বৃটিশ ভারতের পুরুলিয়ার মানভূমে দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম। বাবা ডা রমেশচন্দ্র সেন, মা লীলাবতী। স্ত্রী বেলা উইংগারটেন সেন।কণ্যা সুপ্রিয়া সেন।
১৯৫৮ এর ২৭শে সেপ্টেম্বর ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে সমগ্র বিশ্ববাসির ধারণাকে বদলে দেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় পুরুষ যিনি অনায়াসেই ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে গিনেজ বুকে নিজের জায়গা করেন।
শিক্ষার জন্য মাত্র ৯ বছর বয়সে কটক যাত্রা। ভুবনেশ্বরের উৎকল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইনে স্মাতক, উড়িষ্যার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিজুপট্টনায়কের বদান্যতায়১৯৫০সালে ব্যারিস্টারি পড়তে জাহাজে বিলেত যাত্রা।
১৯৫২এর ২৭শ সেপ্টেম্বর দেশের চতুর্থ দীর্ঘতম(১৪ঘন্টা৪৫মিনিট) সাঁতারু হিসেবে গিনেজ বুকে নাম। অসাধারন কৃতীত্বের জন্য পদ্মশ্রী’-১৯৫৯, পদ্মভূষণ-১৯৬৭,ব্লিৎজ নেহেরু ট্রফি-১৯৬৭ পুরষ্কৃত হন।
১৯৬৬ খ্রীস্টাব্দে তিনি প্রাক প্রণালী, জিব্রাল্টার প্রণালী, পানামা খাল,বার্ডনালেস সহজে অতিক্রম করে নজির সৃষ্টি করেন। বাংলার প্রবাদপ্রতিম দুঃসাহসী জলযোদ্ধা হিসেবে যথেষ্ট বড়।১৯৬৬তে বিহারের হাজিরিবাগ অঞ্চল প্রচন্ড খরার কবলে পড়লে জয়প্রকাশ নারায়ণ এবং মিহির সেন খরা কবলিত অঞ্চলে সেবা করেন। নীলরতন সরকার মেডিকেল কলেজ, আরজিকর মেডিকেল থেকে ডাক্তার স্বেচ্ছাসেবকদের বিহারের প্রত্যন্ত গ্রামে সেবার জন্য পাঠিয়ে দেন ।পশ্চিমবঙ্গের এইসব স্বেচ্ছাসেবকদের কাজে অভিভূত হয়ে পার্টনার “দি ইন্ডিয়ান নেশন পত্রিকায় প্রধান সম্পাদকীয় তে লেখা হয় ভলেন্টিয়ার্স ফ্রম বেঙ্গল” শিরোনামে। পশ্চিমবঙ্গের এই প্রশংসার জন্য মিহির সেন অবশ্যই কৃতিত্বের দাবি করতে পারেন না ।
জীবনের অন্তিম পর্ব আদৌ সুখের ছিল না এই জলযোদ্ধার। জীবিত কালেব কি সরকার ;কি নিকটাত্মীয় কেউই তার পাশে দাঁড়ান নি।তিনি ছিলেন নিঃসঙ্গ নির্বিকার ও চরম উদাসীন। আজকের দিনে বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে স্মরণ করি।
তথ্যসূত্র – ১)প্রতিদিন জন্মদিন মৃত্যু দিন এবং বীরকুমার শী
২)উইকিপিডিয়া কমেন্টেস
৩)”মিহিরসেন হল গ্ৰেটেস্ট”ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ১লা জানুয়ারি১৯৭০