গৌরীশংকর মহাপাত্র: দৈনিক আবেশভূমি ডেস্ক: এগরা কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর ।এগরা-২ ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে কার্যালয়ের সামনে বিবেকানন্দ পঞ্চায়েত প্রধান ও তার অনুগামীরা প্রতিকী অবস্থান-বিক্ষোভ পালন করে আজ মঙ্গলবার।

    প্রধানের দাবি গত তিন বছর পঞ্চায়েত সমিতি ও ব্লক প্রশাসন তাদের রোপিত গাছ বিক্রিতে অনুমতি দিচ্ছেন না। ফলে এলাকার উন্নয়নে, রাস্তা নির্মাণে, ব্রীজ সংস্কারে পঞ্চায়েত পিছিয়ে।এমন কি পঞ্চায়েত এলাকার ৩ পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের মধ্যে রাধারানী দাস ও সাধনা রানী দাস কে উন্নয়নে শরিক না করে বঞ্চিত করা হচ্ছে। বর্তমান ট্রেন্ডারে পঞ্চায়েতগুলি ৭-৮টি করে কাজের সুযোগ পেলেও বিবেকানন্দ পঞ্চায়েতকে বঞ্চিত করা হয়েছে। বঞ্চনার অভিযোগের তীর তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ প্রধান ও ব্লকের প্রশাসনিক প্রধান বিডিওর কৌশিশ রায়ের দিকে। বিডিওর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তিনি নিরপেক্ষ চেয়ারে বসে দলের কথা বলছেন। তৃণমূলের প্রধান হয়ে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের সামিল এ কথা স্মরণ করিয়ে দিলে তিনি জানান- আমি দলের টিকিটে যেমন নির্বাচিত তেমনি আমার দায়বদ্ধতা আমি এড়াতে পারি না। প্রতীকি অবস্থানে আমার গ্রাম পঞ্চায়েত যে বঞ্চিত হচ্ছে তা তুলে ধরা ছাড়া উপায় কি? এর পরের ব্যবস্থা নির্বাচকমণ্ডলীর। আমি যেমন দলের কাছে দায়বদ্ধ তেমনি মানুষের কাছেও দায়বদ্ধ। এ
      বিষয়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দীনেশ প্রধানের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানান- পঞ্চায়েত সমিতির ৮ টি পঞ্চায়েতের সবগুলি তৃণমূল পরিচালিত। এখানে কাউকে আলাদা চোখে দেখার অভিযোগ ভিত্তি হীন। এই অবস্থান নিয়ে কোন ভাবেই দলের সঙ্গে বা পঞ্চায়েত সমিতির সঙ্গে উনি আলোচনা করেন নি। গাছ বিক্রয় নিয়ে আমার কিছু বলার নেই আলোচনা করে সিদ্ধান্ত হবে। দলীয় পঞ্চায়েতকে ভাবতে হবে তিনি সিস্টেমের বাইরে নন, তিনি যা বলছেন তা ঠিক নয়।
      এ বিষয়ে বিডিও কৌশিশ রায় তার প্রতিক্রিয়ায় জানান- ৭টি পঞ্চায়েত নিয়ম-নীতি মেনে চললেও উনি কোনো নিয়মনীতির ধার ধারেন না, নিয়ম বহির্ভূত কাজ করলে প্রশাসনিক কর্তা হিসেবে আমি তা মেনে নিতে পারি না, আমার থেকে সে বাধা শুধু উনি কেন; সব পঞ্চায়েতে থাকবে। বিভিন্ন প্রাপক তালিকা তৈরির ক্ষেত্রেও তিনি যা করেন তাঁর অন্য সদস্যরা এসে বিরোধিতা করে বিকল্প তালিকা প্লেস করেন। গাছ বিক্রির প্রশ্নে তিনি জানান- ঐ গাছ পঞ্চায়েত লাগিয়েছে এমন প্রমাণ নেই, গাছগুলি বনদপ্তর লাগিয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি অনুমতি দিয়েছে। সেক্ষেত্রে ওই বিষয়টি প্রধানের উপরে ছেড়ে দেওয়া যায় না। আর উন্নয়নের প্রশ্নে অন্য প্রধান যে টাকা পান উনিও তাইপান,এখন পঞ্চায়েতের হাতে বেশি টাকা আসে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে কেবল পঞ্চায়েত নয় ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত দায়বদ্ধ। কিছু রাস্তাঘাট পঞ্চায়েত করবে, কোনটি পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ করবে তার তালিকা উর্ধ্বতন কতৃপক্ষের নজরে দেওয়া হয়েছে,বরাদ্দ এলে কাজ হবে। চেয়ারে থেকে দলবাজির প্রসঙ্গে বিডিও জানান- এই অবান্তর অভিযোগ যিনি করেছেন তিনি বলতে পারবেন। ৮ পঞ্চায়েতের থেকে উনি যে পৃথক আচরণ করছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না; এমন চললে সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রশাসনিক কর্মকান্ডে যা হচ্ছে তাতে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও সহ-সভাপতি আমরা ঐক হয়ে করছি। এ বিষয়ে কাঁথি সাংগঠনিক জেলার বিজেপি সভাপতি অনুপ চক্রবর্তী তার প্রতিক্রিয়ায় জানান-পঞ্চায়েত  ও পঞ্চায়েত সমিতি দুটোই তৃণমূলের । “তোর অধে মোর অধে” এই  ভাগা ভাগি নীতিতে  এরা বিশ্বাসী। এরা যতদিন থাকবে ততদিন সাধারণ মানুষ নাজেহাল হবে।

      Share

      Leave a Reply

      Your email address will not be published. Required fields are marked *