দৈনিক আবেশভূমি: এগরা কাঁথি:পূর্ব মেদিনীপুর।পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কেলেঘাই নদী এতদিন পটাশপুরের দুঃখ বলে পরিচিত ছিল। এখন কেলেঘাই নদী কাঁথি ও এগরা মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকার দুঃস্বপ্ন হিসাবে দেখা দিয়েছে।ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরাইল থানার বাদিনীগ্রাম এই নদীর উৎপত্তিস্হল।গুপ্তমণির অাড়াই কিমি দূরে লোধাশুলি পথে দুধকুন্ডির চিরন্তনী অবিরাম উর্ধমুখী মিষ্টি জলস্রোত কেলেঘাই নদীর মূল উৎস। উৎস থেকে ১০৬ কিমি পূর্বে কেলেঘাই নদীর যাত্রাপথে বাঘুই,কপালেশ্বরী উপনদী গুলি যুক্ত হয়ে টেংরাখালী ঢেউভাঙার কাছে দক্ষিণ বাহিনী কাঁসাই নদীর সাথে মিলিত হয়ে হলদি নদীর নাম নিয়ে হুগলী নদীতে পড়েছে। গুপ্তমণি ও সাঁকরাইলের ঢালের বৃষ্টির জল দ্রুত গড়িয়ে পড়ায় নদীটি বন্যাপ্রবন।কেলেঘাই নদীর যাত্রাপথে লাঙ্গলকাটা -ঢেউভাঙা ৫ কিমি বকচরে ৩২ টি ইটভাটা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিদ্যুৎ সংযোগের খুঁটি,মাছের ভেড়ী,ঘরবাড়ি ইত্যাদি অবরোধ তৈরী করে নদীর পরিসরকে ২০০ ফুট থেকে ৪০০ ফুটে নামিয়ে এনেছে। স্বাভাবিকভাবেই পটাশপুরের তালছিটকিনী, সেলমাবাদ, অামগেছিয়া প্রভৃতি জায়গায় নদীবাঁধ ভাঙ্গনের প্রবণতা ক্রমবর্ধমান। এবারের কেলেঘাই নদীর ভাঙনে জলের তোড়ে পটাশপুর-১ ও ২, ভগবানপুর-১ ও ২,এগরা-২ ও কাঁথি -৩ ব্লক সহ চন্ডীপুর ইত্যাদি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত। নদী বাঁধ ভাঙনের মেরামতের কাজ শুরু হলেও নদীর জল ঢোকা এখনও বন্ধ হয়নি।ভগবানপুর-১ ও ২ ব্লকের নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। কেলেঘাই নদীর অববাহিকায় উপনদী ও খালগুলোর সংখ্যা ১৪

                                           টি।বাঘুই নদী খাল, ও পানিনালা- ইটাবেড়িয়া খাল,বাগদী নদী বা বালিঘাই খাল,সিংদা খাল,পটাশপুর খাল,ঘাটুয়া খাল,প্রতাপদীঘি খাল,পঁচেট খাল,চুনা খাল, অাড়গোয়াল -পাঁউসী ক্যানেল, অমর্ষি – বাগদী বাঁধ খাল,ফুলতলা খাল,পানিয়া খাল,লাওয়া খাল প্রভৃতি অন্যতম।কেলেঘাই, বাঘুই, সুবর্ণরেখা, রসুলপুর নদী সহ বারচৌকার জল টইটম্বুর। ক্যানেলগুলিতে পলি জমে নাব্যতা হারিয়েছে। ১০০ দিনের কাজে ক্যানেল সংষ্কারের মাটি কার্যত খালের গর্ভে নিহিত হয়েছে। রসুলপুর নদীর নাব্যতা ক্ষয়িষ্ণু। সমুদ্র ও নদীর বাড়তি জলের চাপে সমস্ত স্লুইসগেটগুলিকে বেশীরভাগ সময় বন্ধ রাখতে হচ্ছে। সবমিলিয়ে জমাজল নিষ্কাশনের পথ অবরুদ্ধ। গ্রামের পর গ্রাম জলে ভাসছে তার উপর অাবার নিম্নচাপের অতিবৃষ্টি পরিস্থিতি কে অারো অবনতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। জলমগ্ন অবস্থা থেকে অদূরভবিষ্যতে নিষ্কৃতির পথ খুঁজে পাওয়া মুস্কিল। প্রাক্তন সহকারী সভাধিপতি মামুদ হোসেন রাজ্য সরকারের মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি ও সেচ মন্ত্রী ডঃ সৌমেন মহাপাত্র কে ই-মেইল বার্তা পাঠিয়ে স্লুইসগেট গুলির মুখে পলি অপসারণের পাশাপাশি রসুলপুর নদী ও বিভিন্ন সংযোগকারী ক্যানেলের নাব্যতা ও গতিপথে অবরোধ মুক্ত করার অাবেদন জানিয়েছেন।

      Share

      Leave a Reply

      Your email address will not be published. Required fields are marked *