প্রকাশ কর :দৈনিক আবেশভূমি : মেদিনীপুর পূর্ব পশ্চিম।৪ঠা মার্চ রবিবার সন্ধ্যা ৯-১৮ মিনিটে সমাজসেবী ও সংগঠক মুক্তেশ্বর কামিলা (৬৮) কাঁথি হাসপাতালে শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন। কয়েক মাস কোমর যন্ত্রনায় ভূগছিলেন, ডাক্তারের পরামর্শেবেল্ট ব্যবহার করতেন। সম্প্রতি কয়েক দিন হালকা জ্বর উপেক্ষা করে কাজ করেছেন, শনিবার মেয়েকে নিয়ে মাঠে কাজ করতে ও কীটনাশক দিতে দেখে লোকে। ঐ দিন রাতে জ্বরের সঙ্গে সারা শরীরে যন্ত্রণা অনুভব করে। আগেই বসন্তিয়া হাসপাতালে কোভিড পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ ছিল। বাবাকে নিয়ে রবিবার সকালে মেয়ে ডা: ইন্দ্রনীল মন্ডল ও ডা: প্রসেনজিৎ সিনহার পরামর্শ মেনে কাঁথি হাসপাতালে ভর্তি করে। ওখানেও কোভিড রিপোর্ট নেগেটিভ আসে।দুপুরে বুকে ব্যথা ও শ্বাস কষ্ট বাড়তে থাকে। ডাক্তার ও নার্স দের টানা চেষ্টা পর সন্ধ্যা ৮-৫৯এ তীব্র শ্বাসকষ্ট থেমে যায়, ডাক্তার ৯-১৮তে মৃত ঘোষণা করেন। পূর্বমেদিনীর জেলার দেশপ্রাণ ব্লকের চালতি পঞ্চায়েতের সরস্বতীপুর গ্ৰামের স্পষ্টভাষী যুক্তিবাদী নিজের সিদ্ধান্তে অনড় পরোপকারী হতদরিদ্র মুক্তেশ্বরবাবুর প্রখর বৈষয়িক বিচার আচারের সিদ্ধান্ত সবার নজর কাড়ত। গ্ৰাম্য প্রতিষ্ঠানগুলিতে তার অবদান ছিল সমানে। সরস্বতীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দীর্ঘদিন পরিচালন কমিটির সদস্য থেকে প্রতিষ্ঠানের শ্রীবৃদ্ধিতে সর্বোত সহযোগিতা করেছেন। বসন্তিয়া বালিকা বিদ্যালয়, “ফুলবনী আমরা ক’জন “সার্বোজনীন দূর্গোৎসব কমিটি সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে তার কাজের দক্ষতা ও যেদ সবার প্রসংশা কুড়িয়েছে। দেওয়াল লিখন, সারা বৎসর রাখি তৈরির কাজ, বিভিন্ন ডিজাইন তৈরী,রাজ মিস্ত্রীর কাজ এমন কি ইটভাটায় ইট কাটার কাজ ও ছিল তাঁর পেশার মধ্যে। কোন কাজকে তিনি কখনো ছোট করে দেখতেন না। যুক্তিবাদী এই সংগঠক বামপন্থা ছেড়ে কংগ্রেস পরে শাসকদলের শিবিরের এক পরিচিত মুখ, ইদানিং আবার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিজেকে দূরে রাখতেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। খবর পেয়ে পঞ্চায়েত সদস্য অপূর্ব পাহাড়ী, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গৌরীশংকর মহাপাত্র ও শিক্ষক নিতীশচন্দ্র পন্ডা সহ কাতারে কাতারে মানুষ হাসপাতালে পৌঁছায়। মৃত্যু কালে তিনি রেখে গেলেন স্ত্রী, বিবাহিতা দুই কন্যা জামাতা দুই পুত্র ও অসংখ্য গুনমুগ্ধ ও শুভানুধ্যায়ী। গ্ৰাম্য শশ্মানে তার শেষকৃত্য সম্পন্নসোমবার হয়। চালতি পঞ্চায়েত প্রধান তপন কুমার সামন্ত, প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য সেখ সাহাজাদা, “ফুলবনি আমরা ক’জন” ক্লাবের পক্ষে দেশপ্রানের প্রাক্তন সভাপতি ব্যোমকেশ মাইতি, রাহুল রাউৎ, সরস্বতীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সহ শিক্ষক প্রসেনজিৎ মাইতি, বিশ্বজিৎ আচার্য্য, সুশান্ত বসু বিদ্যালয়ে মিড ডে মিল পরিষেবাযুক্ত স্ব সহায়ক দলের মায়েরা তাঁর মরদেহে পুষ্পার্ঘ নিবেদন করে শেষ শ্রদ্ধা জানান ও সন্তপ্ত পরিবারে সমবেদনা জানান। মরদেহ প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে স্থানীয় শশ্মানে শেষকৃত্ব সম্পন্ন হয়। পঞ্চায়েত সদস্য অপূর্ব পাহাড়ি ও প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য অরূপ পাহাড়ি উপস্থিত থেকে কাজ সুসম্পন্ন করেন।