
গৌরীশংকর মহাপাত্র: দৈনিক আবেশভূমি: এগরা :কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর। না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন মথুরা পঞ্চায়েতের প্রাক্তন সদস্য ও দক্ষ সংগঠক ভানু চরণ দাস (৭০)। দীর্ঘদিন স্নায়ু রোগে ভুগছিলেন, সল্টলেক সিটিতে একমাত্র ছেলের কাছে থেকে চিকিৎসা চলছিল। মাঝখানে কিছুটা সুস্থ্য হয়ে দিন কয়েক বাড়ি আসেন গৃহপ্রবেশের অনুষ্ঠানে। আবার অসুস্থ হলে বড় মেয়ে সোমা তমলুকে নিজের কাছে রেখে চিকিৎসা সুযোগ নেয়। ২৪শে জুলাই চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন তিনি। ছাত্র জীবন থেকে বরাবর ডানপিটে স্পষ্টভাষী একরোখা বামপন্থায় আস্থাশীল এই সংগঠক যৌবনে সৌখিন যাত্রা দলের প্রমটার, তাস,ভলিবল কাবাডি ও গাদা খেলার জনপ্রিয়তা থেকে পঞ্চায়েত রাজনীতি তে অনুপ্রবেশ এবং ১৯৮৩ থেকে ৯৩ দুটি পর্বে মথুরা পঞ্চায়েতের সদস্য নির্বাচিত হন তাহালিয়া দেউলবার সংসদ থেকে। সক্রিয় রাজনীতি থেকে ছেদ পড়ে ৯৩ এ পঞ্চায়েত সমিতির আসনে প্রিয় বাল্যবন্ধু ড:শিবশংকর মহাপাত্রের কাছে পরাজিত হয়ে। প্রখর বৈষয়িক অভিজ্ঞতা সম্পন্ন সবার প্রিয় ভানুদা ছাত্র জীবনে তীক্ষ্ণ মেধা ও গণিত বিষয়ে দক্ষ ছিলেন। জমি জমার মাপজোকের বিষয়টিও ভালো বুঝতেন তাই এ বিষয়ে সবাই তার সহায়তা নিতেন। খালিপদ ধূতি সর্বস্ব এই বিএসসি বিএড সমাজসেবী সরকারী শিক্ষকতা বা বাঁধা ধরা টিউশনে যুক্ত ছিলেন না ঠিকই কিন্তু ভালো ছেলেদের অবৈতনিক টিউটার ছিলেন। গণিত নিয়ে তার কাছে যারা পড়াশুনো করতো তাদের থেকে জানা কেশব নাগের গণিত বইয়ের কত পৃষ্ঠায় তাদের জিজ্ঞাস্য বিষয়টি রয়েছে তা মুখে মুখে বলে দিতে পারতেন চর্চা দক্ষতার গুনে।
২০১২ তে শিক্ষিকা স্ত্রী সন্ধ্যা দাসের আকস্কিক মৃত্যু থেকে মানসিক দিক থেকে তিনি ভেঙ্গে পড়েন ও ধীরে ধীরে স্মায়ু রোগে আক্রান্ত হন। এলাকার বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও সংঘ সমিতিতে তার নিবিড় যোগ ছিল।সবার প্রিয় ভানুদার মৃত্যু সংবাদে এলাকায় শোকের ছায়া। ঐ দিন রাতেই নিজের বাসভবন মধ্য দেউলবাড় গ্রাম্য শ্মশানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। মৃত্যু কালে তিনি রেখে গেলেন দুই শিক্ষিকা কন্যা, দুই জামাতা ,ইঞ্জিনিয়ার পুত্র ও স্বাস্থ্যকর্মী বৌমা সহ অসংখ্য গুনমুগ্ধ।