
গৌরীশংকর মহাপাত্র :দৈনিক আবেশভূমি : মেদিনীপুর পূর্ব পশ্চিম। সমাজমাধ্যমকে হাতিয়ার করে মেদিনীপুরের সমাজকর্মীদের হাত ধরে নিজের জেলার জাম্বনী ব্লকের গৈত গ্রামে ৬ বৎসর পরে ফিরলেন বছর ৩৫শের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মাড়ধা সরেন। বছর ছয়েক আগে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খড়্গপুর এসে হঠাৎই দলছুট হয় “কথা না বলতে পারা” মাড়ধা সরেন। বিগত ছ-বছর ধরে সব চেষ্টা করেও মাড়ধাকে খুঁজে পায়নি তার পরিবার। ৮ই আগষ্ট মেদিনীপুর শহরের পাহাড়িপুরের যোগা প্রশিক্ষক সমাজকর্মী পূর্ণেন্দু শেখর কালীর নজরে আসে বাড়ির সামনে আলুথালু পোষক- পরিচ্ছদে ব্যাগপত্র নিয়ে এক ব্যক্তি বসে । পূর্ণেন্দুবাবু বিকেলে ও রাতে তাকে খাবার দেন।পাশাপাশি তিনি ফেসবুক লাইভে এই ব্যক্তিকে কেউ যাতে চিনতে পারে সেই লক্ষ্য বিষয়টি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করেন। পাশাপাশি ফোনে চুয়াডাঙ্গা হাইস্কুলের শিক্ষক সমাজকর্মী সুদীপ কুমার খাঁড়া সহ বন্ধুস্থানীয়দের জানান।পূর্ণেন্দুবাবু সোমবার মেয়ের অসুস্থতার কারনে প্রায় গোটা রাত জেগেছিলেন এবং মাধড়ার দিকে নজর রাখছিলেন।ভোর চারটার দিকে পাহাড়িপুর স্কুল এলাকায় কুকুরের উপদ্রবে মাধড়া অবস্থান বদল করে এবং পূর্ণেন্দুবাবুর নজরের বাইরে চলে যায়। মঙ্গলবার সকালে পূর্ণেন্দুবাবু তাকে বাড়ির সামনে না দেখতে পেয়ে কিছুটা হতাশ হন। ইতিমধ্যে সমাজমাধ্যম সূত্রে মাড়ধার মেদিনীপুরে থাকর খবর পৌঁছে যায় বাড়িতে। বাড়ির লোকেরা পূর্ণেন্দু বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পূর্ণেন্দু বাবু বাড়ির লোকদের বুধবার সকালে মেদিনীপুর আসতে বলেন এবং আশ্বাস দেন যেকোনো ভাবেই মাধড়াকে খুঁজে বের করবেন। বুধবার সকালে মাধড়াকে জগন্নাথ মন্দিরে চকের পুরানো বেথেল অফিসের সামনে ঘোরাঘুরির খবর পেয়ে ঘটনা স্থলে চলে আসেন পূর্ণেন্দু বাবু। পাশাপাশি তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন মাধড়ার ভাই চুনারাম সরেন,প্রতিবেশী নিত্যানন্দ টুডু এবং মেদিনীপুর পুলিশ লাইনের ফকির মান্ডিরা।তাঁরা মাড়ধাকে সনাক্ত করেন। উপস্থিত হন খড়্গপুরের অতুলমণি পলিটেকনিক স্কুলের শিক্ষক সেবাব্রত দত্ত, শিক্ষক সুদীপ খাঁড়ারা। সব কিছু খতিয়ে দেখারপর বাড়ির লোকেরা মাধড়াকে পেয়ে পূর্ণেন্দুবাবু সহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।মাধড়াকে বাড়ি ফিরিয়ে দিতে পেরে খুশি পূর্ণেন্দুবাবু, সুদীপ বাবুরা।মাড়ধারা গ্রামে পৌঁছালে “হারিয়ে যাওয়া” ঘরের ছেলেকে পেয়ে গোটা গ্রাম মাড়ধাদের বাড়িতে এসে ভীড় জমায়।