প্রদীপ কুমার মাইতি, কেশপুর: পাল্টায়নি কেশপুর! বাম আমলে বিরোধী দলের কর্মী থেকে সংবাদ মাধ্যমকে দেখলেই কেশপুরের লোকজন শাসকদলের অদৃশ্য অঙ্গুলী হেলনে আতঙ্কে দরজা বন্ধ করে দিত ৷ আমল পাল্টালেও পাল্টায় নি কেশপুরের মানুষের সেই আতঙ্কের চিত্র ৷

    রবিবার কেশপুরে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষ প্রচারে আসবেন জানতে পেরেই আগে থেকে যেন অঘোষিত বনধ দেখা গেল কেশপুরের বিভিন্ন এলাকায় ৷ সাধারন মানুষকে বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের থেকে দুরে সরিয়ে রাখতেই নেতারা আগে থেকেই সমস্ত দোকান বাজার বন্ধ করার হুশিয়ারি দেন ৷

      সেই খবর ভারতী ঘোষের কাছে স্থানীয়রাই জানিয়ে দেন ম্যাসেজ করে ৷ প্রচার শুরুর স্থান আমড়াকুচি এলাকায় বন্ধ খাঁ খাঁ বাজার দেখেই তেলে বেগুনে জলে যান ভারতী ৷ সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কেশপুরের পুলিশের ওসি হীরক বিশ্বাসের কাছে গিয়ে ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি ৷ হুশিয়ারি দিয়ে জানান- এই বাঁদরামো না আটকালে আপনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে যাবো ৷ ওসি হয়েছেন স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে থাকার জন্য নয় ৷


        রবিবার কেশপুরের থানার সীমানা আমড়াকুচি থেকে প্রচার শুরুর কর্মসুচি ছিল ঘাটাল লোকসভার বিজেপি প্রার্থী ভারতী ঘোষের ৷ আগেই পুলিশকে সেই কথা পুলিশকে জানিয়ে অনুমতি নিয়েছিলেন ৷ কিন্তু রবিবার সকালেই তিনি জানতে পারেন শাসকদলের পক্ষ থেকে ভারতী ঘোষের প্রচারের রাস্তাতে সমস্ত দোকান পাট বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে ৷ বেলা বারোটা নাগাদ তিনি যখন প্রচারের জন্য আমড়াকুচিতে নামেন তখন দেখেন পুরো বাজার বন্ধ, শুনশান এলাকায় দাঁড়িয়ে রয়েছে পুলিশ বাহিনী ৷ তিনি সোজা গিয়ে কেশপুর থানার পুলিশের ওসি হীরক বিশ্বাসের কাছে ক্ষোভ উগরে দেন ৷ তিনি বলেন ” আপনাদের আগে থেকে বলা সত্বেও মানুষকে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভয় দেখিয়ে দোকানবাজার বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে ৷

          এই বাঁদরামো না আটকালে আপনার বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে যাবো ৷ ওসি হয়েছেন স্ট্যাচুর মতো দাঁড়িয়ে থাকার জন্য নয় ৷মনে রাখবেন সিআইডি ও এভাবে বন্ধ রেখে আমাকে আটকানো যাবেনা ৷” পরিস্থিতি দেখে ভারতী ঘোষ আমড়াকুচি বাজারেই দাঁড়িয়ে পড়েন ৷ দেখা যায় ভারতী ঘোষকে দেখতে বেশ কিছু কৌতুহলি মানুষ সেখানে হাজির হচ্ছেন ৷ তাদের দেখে মাইক হাতে ভারতী ঘোষ বলতে শুরু করতেই তৃণমূলের স্থানীয় নেতারা এসে সকলকে সরিয়ে বাড়ি চলে যেতে বলেন ৷ ভারতী ঘোষকে লক্ষ্য করে কটুক্তি করাও শুরু হয় ৷ অন্যদিকে ভারতী ঘোষের কর্মীরাও পাল্টা স্লোগান দিতে থাকে ৷ পরিস্থিতি উত্তেজনাপুর্ন দেখে পুলিশ সামাল দিতে গিয়ে হাঁসফাঁস অবস্থা ৷ সকলকে হুশিয়ারি দিয়ে মাইকে ভারতী জানান- “কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই আমি দাঁড়িয়ে থেকে ভোট করাবো এখানে ৷জানিয়ে গেলাম৷” এরপর বগছড়ি এলাকাতেও একই ফাঁকা চিত্র দেখে রাস্তা থেকে পাড়ার দিকে এগিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন ৷ পরে সেখান থেকে কেশপুর বাজার ঘুরে বাসস্ট্যান্ডে টেম্পো গাড়িতে উঠে মাইকে নিয়ে বক্তব্য রাখেন ৷ ভারতী ঘোষ সংবাদ মাধ্যমের সামনে বলেন- “বাড়িবাড়ি ঢুকে টিএমসির গুন্ডারা ভয় দেখিয়েছে দোকানপাট বন্ধ রাখার জন্য ৷মানুষ ভারতী ঘোষকে চায় না এই বার্তা দিতেই বন্ধ করা হয় জোর করে ৷ এখানে ওসি কাজ করছে না ৷ মানুষকে নির্ভয় করতে পারছেনা ৷ অন্যদিকে সিআইডিও চেষ্টা করছে আমাকে গৃহবন্দী করে রাখতে ৷ওদের সবার লক্ষ্য একটাই ভারতীকে আটকে বিজেপি মুখী মানুষকে আটকানো ৷এটা সফল হবেনা ৷এর দ্বারা বোঝা যায় পুরো দলটাই ভীতুতে ভর্তি ৷হিম্মত থাকলে সামনে এসে লড় ৷মানুষকে নিজের রায় দেওয়ার সুযোগ দিক ৷” এবিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বলেন-” আমাদের এসব করার প্রয়োজন হবে না ৷ মানুষ ওনাকে চেনে, তাই নিজেরাই ওর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন৷

          Share

          Leave a Reply

          Your email address will not be published. Required fields are marked *